পদ শূন্য না থাকায় পদোন্নতি বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষা ক্যাডাররা

 প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২২, ০২:১৯ অপরাহ্ন   |   শিক্ষা

পদ শূন্য না থাকায় পদোন্নতি বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষা ক্যাডাররা

 সরকারি তিতুমীর কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের একজন শিক্ষক আট বছর আগে সহযোগী অধ্যাপক হয়ে এখনো সেই পদে রয়েছেন। তিনি জানান, অধ্যাপকের পর্যাপ্ত পদ না থাকায় তাঁকে পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে না।


অভিযোগ রয়েছে, প্রশাসন, পুলিশ, পররাষ্ট্রসহ কয়েকটি ক্যাডার বাদে অন্যান্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সময়মতো পদোন্নতি হয় না। এর মূল কারণ হলো এসব ক্যাডারে পদসংখ্যার বাইরে পদোন্নতি দেওয়া হয় না। কিন্তু জনপ্রশাসনসহ আরও কয়েকটি ক্ষেত্রে পদের বাইরেও পদোন্নতি দেওয়া হয়।


সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে ২৬টি ক্যাডারে কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়। এসব ক্যাডারের মধ্যে পদোন্নতি ও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে বৈষম্য আছে।


কর্মকর্তাদের সংখ্যার দিক দিয়ে বিসিএস স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্যাডার বড়। বর্তমানে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে মোট পদ আছে ১৫ হাজার ৭৭৪টি। এর মধ্যে ৩ হাজার ৫৩১টি পদ শূন্য। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের অধিকাংশই সরকারি কলেজে শিক্ষকতা করছেন। কিছুসংখ্যক কর্মকর্তা শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত।


২৬তম বিসিএসে ২০০৬ সালে চাকরি পাওয়া সরকারি বাংলা কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের একজন সহকারী অধ্যাপক নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে কিংস নিউজকে বলেন, সাধারণত বিভাগীয় পরীক্ষা ও বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদন (এসিআর) ঠিক থাকলে প্রভাষক পদে চার বছর চাকরির পর সহকারী অধ্যাপক হওয়ার জন্য যোগ্য হন কলেজ শিক্ষকেরা। কিন্তু তাঁরা পদোন্নতি পান আট বছর চাকরির পর ২০১৪ সালে। সহকারী অধ্যাপক পদে তিন বছর চাকরি করলে সহযোগী অধ্যাপক হওয়া যায়। কিন্তু প্রায় আট বছর হয়ে গেলেও তিনি এখনো সহকারী অধ্যাপক পদেই রয়ে গেছেন।


সরকারি বাংলা কলেজের এই শিক্ষক এখন বেতন পান জাতীয় বেতন কাঠামোর ষষ্ঠ গ্রেডে। তিনি বলেন, তিনি যে বিসিএসে নিয়োগ পেয়েছেন, তার পরের বিসিএসে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তারা পদোন্নতি পেয়ে পঞ্চম গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন।


শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের আগে তৃতীয় গ্রেড পর্যন্ত যাওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু ২০১৫ সালের জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী, তাঁরা যেতে পারেন সর্বোচ্চ চতুর্থ গ্রেড পর্যন্ত। ফলে এখন পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে এই যে শিক্ষা ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক নেহাল আহমেদ রয়েছেন চতুর্থ গ্রেডে, আবার সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপকেরাও একই গ্রেডে বেতন পান।


মাউশির মহাপরিচালকের পদটি গ্রেড-১ করা হয়েছিল। কিন্তু শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা যেহেতু চতুর্থ গ্রেডের ওপরে যেতে পারেন না, তাই ৩ ও ২ নম্বর গ্রেড ডিঙিয়ে তাঁদের গ্রেড-১-এ যাওয়ার সুযোগ একেবারেই কম। মাউশির সর্বশেষ তিনজন মহাপরিচালকের কেউ গ্রেড-১-এ যেতে পারেননি।


এদিকে দেশের ৯৫টি বড় সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের পদ গ্রেড-৩-এ উন্নীত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে গত জুনে। উচ্চতর পদে পদোন্নতি-সংক্রান্ত সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডের (এসএসবি) মাধ্যমে এ পদে যেতে হবে। তবে বোর্ডের সভা এখনো হয়নি।


মাউশির পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) ও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সভাপতি শাহেদুল খবীর চৌধুরী বলেন, অন্যদের মতো ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতি ও পদ সৃষ্টি হলে শিক্ষকদের সমস্যা কমবে।

শিক্ষা এর আরও খবর: